এ্যাম্বার

AMBBER: এ্যাম্বারAmber_Stone1

তৈলস্ফটিক বা সৌগন্ধিক , বর্ণের দিক থেকে হালকা হলুদ বর্ণ হতে শুরু করে বাদামী, লাল, সাদাভ এমনকি নীল, কালো ও সবুজাভ ও ধবধবে সাদা হয়। স্বচ্ছ ও অস্বচ্ছ শ্রেণীর সৌগন্ধিক (Ambber) পাওয়া যায়। খাঁটি সৌগন্ধিক স্বচ্ছ উজ্জ্বল ও মধুর মতো কাটাভা হলুদ বর্ণের। এই রত্নটিতে সুগন্ধ আছে। রত্নটি দুর্লভ অতিশয় দুস্প্রাপ্য ও মূল্যবান। Ambber ভঙ্গুর সবচেয়ে হাল্কা পাথর। সূর্যালোকে এটি বড় চমৎকার দেখায় এবং শিশির বিন্দুর মত চক চক করে। এর প্রতিফলন আভা তৈলাক্ত ধরণের। যে কারণে এই রত্নকে তৈলস্ফটিকও বলে।

উপাদান (Chemical Composition): Approx C10H160 Mixture of various resins.

কাঠিন্যতা (Hardness): 2- 2.5

আপেক্ষিক গুরুত্ব (Speciflc Gravity): Usually 1.05-1.09 Maximum 1.30.

প্রতিসরণাংক (Refractive Index): 1.54

বিচ্ছুরণ (Dispersion): None (নাই)

প্রাপ্তিস্থান: এ্যাম্বার পাওয়া যায় উওর ইউরোপের বাল্টিক সাগর এলাকায়। সাগরের পানির সাথে কিছু এ্যাম্বার উপকূলে এসে যায়। সাধারণত নীল মাটি নামে পরিচিত নরম কাদার থেকেই এ্যাম্বার রত্ন আরহণ করা হয়। এছাড়া আমেরিকা, রোমানিয়া, বার্মা (মায়ানমার), কানাডাতে সিসিলি দ্বীপে পাওয়া যায়।

উপকারিতা: জ্যোতিষশাস্ত্রে বলা হয়েছে এ্যাম্বার ব্যবহারে স্বাস্থ্যরক্ষা ও নানা ধরণের দৈব দুর্বিপাক ও গ্রহ দোষ থেকে রক্ষা করে। ইহা একটি জয়প্রদ রত্ন। এ্যাম্বার রত্নে কিছু ভেষজগুণ আছে বলে শোনা যায়। লোকের প্রচলিত ধারনা, এ্যাম্বার ধারণ করলে যাদু, বান, টোনা, থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সেকালে অধিকাংশ গ্রীক ও রোমানদের জনগণ বিশ্বাস করতো এবং এটি ধারন করত।

এ্যাম্বার নিয়ে কিছু কথা

এ্যাম্বার বৈদ্যুতিক হয়ে যাবার ক্ষমতা রাখে। এ্যাম্বারকে শুকনো কাপড় দিয়ে ঘর্ষণ করতে থাকলে তড়িৎ চুম্বক শক্তিতে ছোট কাগজের টুকরা ও খড়ের টুকরোকে আকর্ষণ করে নেয়। এ্যাম্বারের গ্রীক নাম ইলেকট্রন (ELEKTRON), ইলেক্ট্রিসিটি শব্দের উৎস এই শব্দটিই। এ্যাম্বার খনিজ পাথর নয়। জীবন থেকে নেয়- তবে সে জীবন আজকের নয় ঝিনুক বা পলিপস-এর মতো। প্রাচীনকালে পৃথিবীতে এক রকম পাইন বৃক্ষ বা দেবদারু জাতীয় সম্পদ, আজও শহর গ্রামে কদাচিত দু-একটি গাছ দেখতে পাওয়া যায়। বিশেষ একটা রজন জাতীয় দ্রব্য নি:সৃত কষ আঠার মত এই গাছের গা থেকে চুইয়ে চুইয়ে বেরুত। মাটির উপর বিপুল পরিমাণে জমা হয়েছিল এই দ্রব্য এবং ভূত্বক পরিবর্তনের সময়ে, এই দ্রব্য মাটি চাপা পড়ে যায়। হাজার হাজার বছর পরে এই দ্রব্যই জীবাশ্মে পরিণত হয়, অথবা শক্ত হয়ে গিয়ে আজকের এ্যাম্বার হয়ে যায়। আদতে এ্যাম্বার নরম, চটচটে থাকার ফলে অনেক পোকামাকর এর গায়ে আটকে থাকে। হাজার হাজার বছরে কঠিন হতে থাকে দ্রব্য, পোকা মাকড়গুলো সংরক্ষিত থাকে এ্যাম্বার রত্নের মধ্যে। দেখে কিন্তু মনে হয় যে পাইন বা দেবদারু জাতীয় গাছ থেকে মূলত: এ্যাম্বারের সৃষ্টি ঘটেছিল, সে গাছ যে অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে জন্মাতো, এখন তার নাম বাল্টিক সমুদ্র আর উত্তর সমুদ্র। এ অঞ্চল ভূপৃষ্ঠে একটু একটু করে জলের তলায় ডুবে যায়। প্রাচীনকালে প্রবল ঝড়জলে বিক্ষুব্ধ হলেই এ্যাম্বারের টুকরো তীরে এসে পড়ে। একালে-এ্যাম্বার তুলে আনা হয় ধাতু নিস্কাশনের খনি খননের মাধ্যমে। সাধারণত এ্যাম্বার পাওয়া যায় ছোট ছোট টুকরো আকারে। ১৮ পাউন্ড ওজনের বড় ডেলাও পাওয়া গেছে বলে জানা যায়। প্রাচীন গ্রীক পুরানে উল্লেখ রয়েছে – “তরুণ এক গ্রীক দেবতার ভগিনীদের অশ্রুতে গড়া এ্যাম্বার। সেই তরুন গ্রীক দেবতা চেয়েছিলেন অশ্বারোহনে স্বর্গে যেতে। কিন্তূ দুর্ভাগ্য ঘোড়া নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাণ হারান। ভাই-এর নির্বোধ ইচ্ছেকে উৎসাহিত করার জন্য বোনদের শাস্তি দিয়ে বৃক্ষে রূপান্তরিত করা হয়। তাদের অশ্রু সূর্যালোকে ঘনীভূত হয়ে এ্যাম্বারে পরিণত হয়েছে।”

সঠিক রাসায়নিক বিশ্লেষণ, শুভ তিথীযুক্ত দিন ব্যতীত এবং বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে শোধন না করে যে কোন রত্ন পাথর ধারণ করা অনুচিত। এতে করে শুভ ফল পাবেন না । শোধন প্রক্রিয়া সময় সাপেক্ষ তথাকথিত প্রচলিত ভ্রান্ত সাধারণ নিয়মে দুধ, মধু, গোলাপজল, জাফরান , আতর, জম জম কূপের পানি, নদীর পানি কিংবা গঙ্গা জল ইত্যাদি দ্রব্য / বস্তু দ্বারা শোধন কখনও করা হয় না বা করার বিধান শাস্ত্রে নেই ।